১০টি প্ল্যাস্টিকের বোতলের বিনিময়ে একটি কম্বল


প্রকাশের সময় : ডিসেম্বর ১২, ২০২৩, ৩:৫৫ PM
১০টি প্ল্যাস্টিকের বোতলের বিনিময়ে একটি কম্বল

প্রতি বছর উত্তরবঙ্গে তীব্র শীতে গরম কাপড় না থাকায় আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন অসংখ্য মানুষ। পাশাপাশি প্ল্যাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমাতে ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই’ নামের সামাজিক সংগঠন কনকনে শীতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। রংপুর নগরীর কামারপাড়ায় সংগঠনটির উদ্যোগে ভিন্নধর্মী সচেতনতামূলক এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সদস্যরা জানান, কনকনে শীতে মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং একটু উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য। প্রথম ধাপে ১০টি করে পরিত্যক্ত প্ল্যাস্টিকের বোতলের বিনিময়ে প্রায় ২০০ পরিবারকে কম্বল উপহার দিয়েছেন তারা। পরিবেশকে প্ল্যাস্টিক দূষণমুক্ত করার এ প্রচেষ্টায় সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি শিশুরাও সচেতন হচ্ছে। মানুষকে উৎসাহ দিতে উৎসবমুখর পরিবেশে খেলাধুলা ও বিনোদনের মাধ্যমে উপহার হিসেবে এ কম্বল দেওয়া হয়।

তারা জানান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতাই এ উদ্যোগের মূল কারণ। রংপুরে প্রথমবারের মতো তারাই এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তারা এ উদ্যোগের মাধ্যমে মানব সমাজকে একটি বার্তা দিতে চান। তা হলো- প্ল্যাস্টিকের ফলে পরিবেশ যে হারে দূষিত হচ্ছে, তা ধীরে ধীরে হুমকিতে রূপ নিচ্ছে।

এ কর্মসূচির মাধ্যমে কম্বল পাওয়া আউয়াল মিয়া (৬৮) বলেন, ‘হামরা তো গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। এই কম্বল খান প্যায়া খুব উপকার হইলো। শীতের দিনোত এরাগুলো হামার পাশত আসি দাঁড়াইছে। হামাক অনেক আনন্দ নাগছে। আল্লাহ ছাওয়াগুলার ভালো করুক।’

সুবিধাভোগী শহিদার রহমান (৫৬) বলেন, ‘ছাওয়াগুলাক হামরা ১০টা করি নষ্ট বোতল দিছি। দিইয়া এখান করি কম্বল পাছি। তাতে করি পরিবেশ সুরক্ষা পাবে। হামরাও কম্বল পেয়া খুশি। হামরা তো এইল্লা পাই না। এমরা দিলো, হামরা খুবে সন্তুষ্ট।’

মোছলেমা বেগম (৩৪) বলেন, ‘এখানে একটা সচেতনতামূলক আয়োজন করেছে তারা। প্ল্যাস্টিকের পুনরায় ব্যবহার সম্পর্কে জানালো। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে। আজকে ১০টি করে প্ল্যাস্টিকের বোতল দিয়ে আমরা কম্বল পেলাম। আমরা চেষ্টা করবো পরিবেশটা সুরক্ষা করার। প্ল্যাস্টিক দূষণ রোধ করার।’

চলো স্বপ্ন ছুঁইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা মো. তানজিম আলম তাসিন বলেন, ‘পরবর্তী প্রজন্মকে প্ল্যাস্টিক দূষণমুক্ত পৃথিবী উপহার দিতে আমাদের এ উদ্যোগ। আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে এ কার্যক্রম শুরু করেছি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. মুহতাসিম আবশাদ জিসান বলেন, ‘আমরা জিরো প্ল্যাস্টিক ওয়েস্টের একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করে প্ল্যাস্টিকের বিনিময়ে শীতার্ত মানুষকে উপহার হিসেবে কম্বল দিয়েছি। সমাজের বিত্তবানরা এবং কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পেলে আমরা ক্যাম্পেইন অব্যাহত রাখতে পারবো।’

https://www.bkash.com/