বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর সারাদেশে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে কড়া তল্লাশি চালানো হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
নিষিদ্ধ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় জামায়াত-শিবিরের পক্ষ থেকে কোনো সহিংসতা হলে, তা দমনের সক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত নিয়ন্ত্রণে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে পুলিশকে। পরে র্যাব-পুলিশের সঙ্গে বিজিবি ও সেনাবাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যোগ দেয় এবং ধাক্কা সামলে ওঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে দুই শতাধিক প্রাণ ঝরে যায়।
মেট্রোরেলসহ কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস হয়। সেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা জানান, নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াত-শিবির কোনো ধরনের সহিংসতার চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।
সূত্র বলেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) ৩২ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য কর্মরত। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তাদের বড় অংশই এখন মাঠে। যেকোনো ধরনের সহিংস আন্দোলন যেন আর মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে, সে জন্য কাজ করছে পুলিশ। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আরও অন্তত ১০ হাজার পুলিশ সদস্য ঢাকায় আনার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, যে কোনো ধরনের সন্ত্রাস-নাশকতা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ডিএমপি। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।
একাধিক জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আমাদের সময়কে বলেন, পুলিশের সব টিমই এখন নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছে। জামায়াত-শিবির যেন কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটাতে না পারে, সে জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
কোটা সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ১৬ জুলাই থেকে তীব্র আকার ধারণ করলে ঢাকাসহ আশপাশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পুলিশকে সহায়তা করার জন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিকে নামানো হয়। এর পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, মেট্রো রেলস্টেশন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, বিভিন্ন থানা, পুলিশ ফাঁড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সংঘাত, ভাঙচুর, আগুনে বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। শেষ পর্যন্ত কারফিউ জারি করে নামানো হয় সেনাবাহিনী। এখনো র্যাব-পুলিশের সঙ্গে বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে আছে।
https://slotbet.online/