বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে চলে পড়ালেখা


প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৬, ২০১৬, ৮:৩১ AM
বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে চলে পড়ালেখা

ccccজাহিদুল ইসলাম খান, ভালুকা : বৃষ্টির ঝাপটায় শরীর ভিজে যায়। রোদের তাপে বসে থাকা দায়।একটু জোরে বাতাস বইলে উড়ে যায় বই খাতা। অপরদিকে শিক্ষক সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত ও প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়েই চলছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাতলামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ।
স্কুল সূত্রে জানাযায়, এখানে শিক্ষার্থী ৩৬১জন। শ্রেণীকক্ষ পাঁচটি ও একটি লাইব্রেরী এবং অফিস একটি। পাঁচটি শ্রেণীকক্ষের মধ্যে টিনের বেড়া ভাঙ্গাচোড়া ও টিনের চালা ফুটা হওয়া প্রায় শ্রেণী কক্ষ। জায়গা সংকুলেনে লাইব্রেরীতেও ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এমন ঝরাজীর্ণ শ্রেণীকক্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করছে ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের এক কোণে টিনের ছাউনি দিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান চলছে। তখন আকাশে ছিল মেঘ। লেখাপড়ার চেয়ে আকাশের দিকেই ছাত্রছাত্রীদের মনোযোগ ছিল বেশী। বারবারই তারা তাকাচ্ছিল আকাশের দিকে।
ছাত্রছাত্রীরা জানায়, বৃষ্টি এলে তাদের জামা ভিজে যাবে, এ জন্য তারা বারবার আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর শুধু বৃষ্টি নয়, জোরে বাতাস হলেও তাদের দৌড়ে অন্য শ্রেণিকক্ষে যেতে হয়। আর রোদও তাদের চরম ভোগান্তির কারণ ।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বৃষ্টি শুরু হলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়। বিশেষ করে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থী যারা টিনসেট ঘরে ক্লাস করে বৃষ্টি আসলে ক্লাস বন্ধ করে তাদের বিল্ডিং ঘরে এনে জড়ো করতে হয়।
কাতলামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা খাতুন জানান, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি ২০০০সালে এমপিওভুক্ত হয়। ২০০৬সালে ৯ম-১০ম শ্রেনীর অনুমতি ও ২০০৯সালে স্বীকৃতি লাভ করে। বিদ্যালয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন ৭জন। ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত এ সীমিত শিক্ষক দিয়েই চালাতে হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৬১জন। শিক্ষক সংকট যেমন রয়েছে তার চেয়ে বড় সমস্যা অবকাঠামোগত। ওয়ার্ল্ড ভিশনের নির্মান করে দেয়া বিল্ডিংটি ৩টি কক্ষের মধ্যে ১টি শিক্ষক মিলনায়তন হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। অন্য দু’টি কক্ষে নবম ও দশম শ্রেনীর ক্লাস নেয়া হলেও ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেনীর ক্লাস গুলো নেয়া হয় প্রতিষ্ঠা লগ্নের টিনের বেড়া ও ছাউনি কর‍া। ১শত ফিটের ঘরটিতে। দীর্ঘদিনের এ ঘরটি এখন ব্যবহার অনুপযোগী। টিনের বেড়াও যেমন বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ফাঁকা হয়ে আছে তেমনি উপরের ছাউনির অবস্থাও বেহাল। বৃষ্টি শুরু হলে ঘরের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ায় উপর ও নীচ দু’দিকেই মোকাবেলা করতে হয় শিক্ষার্থীদের ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, অবকাঠামো দূর্বল এর জন্য পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে তাই আমি তাদেরকে উপজেলা পরিষদ বরাবর আবেদন করতে বলবো এবং আমি মিটিংয়ে উপস্থাপন করবো ।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়টির সমস্যা সমাধান কল্পে আন্তরিক প্রচেষ্ঠা চালানো হচ্ছে।

https://www.bkash.com/