কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ও তার বাবাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলার অভিযোগ


প্রকাশের সময় : জুন ১২, ২০২১, ৭:০৯ PM
কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ও তার বাবাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলার অভিযোগ

ফুলবাড়িয়া নিউজ 24 ডট কম :  ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পারিবারিক জমিকে কেন্দ্র করে এক কলেজ পড়ুয়া ও তার বাবাকে জড়িয়ে থানায় মিথ্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে। সেই ছাত্র তার প্রাইভেট কর্মস্থলে ছিল এবং বাবা ভ্যান চালক ভাড়া নিয়ে উপজেলা সদরে অবস্থান করছিলেন বলে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়। এ নিয়ে কলেজ পড়ুয়া ঐ ছাত্রের আক্ষেপের একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৃত ওহেদ আলীর তিন পুত্র। জয়নাল, সাইফুল ও হারুন। রাধকানাই ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে ৩০শতক জমির মালিক ৩ ভাই। সম্প্রতি বড় ভাই জয়নাল জনৈক জামাল উদ্দিনের কাছে ১১শতক জমি বিক্রি করে দেন। হিস্যা অনুযায়ী ১০শতক জমি পাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি বিক্রি করেছেন ১১শতক। ১শতক জমি তাদের দুই ভাই সাইফুল ও হারুন কে রেজিস্ট্রি করে দিতে বলেন। তারা না দেওয়ায় দুই ভাইয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয় জয়নাল। এদিকে সাইফুলের অংশটুকু জোর পূর্বক   অন্যত্র দখল করে দেন। এখন বাকী আছে হারুন এর অংশটুকু। ক্ষিপ্ত জয়নাল দুই ভাইয়ের উপর নগদ টাকা নেওয়ার অভিযোগও আনে। কিন্তু স্বাক্ষীর অভাবে সেই পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়। ৭জুন সেই হারুন এর জমিতে ঘর তোলতে যায় জয়নাল এর নেতৃত্বাধীন পরিবার। সেখানে হারুন ও জয়নালের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনাও ঘটে। উভয় পক্ষের লোকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১০জুন দুপুর ১২.৩০মিনিটে জয়নালের স্ত্রী রিনা আক্তার বাদী হয়ে অপর আত্বীয় আয়শা আক্তারের মাধ্যমে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধে ৭জুন সকাল অনুমান ১০ঘটিকার সময় হত্যার উদ্দেশ্যে হারুন, হারুন পুত্র সোহান, হারুনের স্ত্রী বুলবুলি, সাইফুল ইসলাম, সাইফুল পুত্র শাকিল গংরা আক্রমন করে হাড়কাটা গুরুতর জখম করে। অথচ সাইফুল ও সাইফুলের পুত্র কলেজ পড়ুয়া শাকিল ঘটনার দিন সকাল ৯টা হতে ফুলবাড়িয়া উপজেলা সদরে অবস্থান করে তার কর্মস্থলে ডিউটি করতেছিলেন। যার একটি ভিডিও ফুটেজও রয়েছে।
কলেজ পড়ুয়া শাকিল বলেন, কাকার সাথে জেঠার একটা জমি নিয়ে দ্বন্দ চলছে। আর ঘটনাস্থল থেকে আমাদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। আমি প্রাইভেট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করি। ঐদিন সকাল ৯টা হতে আমি আমার কর্মস্থলে ছিলাম। আমার বাবা সাইফুল ইসলাম একজন ভ্যানচালক। তিনি ভাড়া নিয়ে ফুলবাড়িয়ায় এসে বেলা ১১টার দিকে আমার সাথে দেখা করার জন্য দোকানে এসেছিল। যা সিসিটিভি ফুটেজে রেকর্ড করা হয়েছে। শুনেছি ঘটনাটি ১০.৩০ মিনিটে ঘটেছে অথচ আমরা বাবা ছেলে দু’জনই উপজেলা সদরে অবস্থান করার পরও মামলার আসামী হলাম কিভাবে? ইতিমধ্যে মামলাটি এফআইআর করা হয়েছে। আমি বিনয়ের সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছি।
সাইফুল ইসলাম জানান, আমি সহজ, সরল ও নিরীহ মানুষ। আমার একমাত্র ছেলে শাকিল। আমাদের জড়িয়ে যে মামলাটি হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। বড় ভাই আমাকে জমি লিখে দিতে বলে কিন্তু আমি দেই না। তাই বলে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এর আগেও আমার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ এনেছিল, এহনা আবার মামলা দিয়েছে। কয়েকদিন যাবত এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে জমি কাওলা দিলে দিবি, তা না হলে কাওলা কিভাবে নিতে হেইটা (সেটা) আমি জানি। ঘটনার আগের দিন রাতে তারা পরিকল্পনা করে ছোট ভাইয়ের জমিতে ঘর উঠাবে। আমি সকালেই বাড়ী থেকে ভ্যান নিয়ে বের হয়ে পড়ি। ১২টার দিকে উপজেলা সদরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব হারুন অর রশিদ হারুন ভাইয়ের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমাকে ফাঁসানো ও হয়রানির জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জ্যোতিশ চন্দ্র দেব বলেন, বাদী যে কাউকে বিবাদী করতে পারে, মামলা তদন্ত করে দেখা হবে কারা দোষী আর কারা নির্দোষী।

https://www.bkash.com/