আমার ফুলবাড়ীয়া র্পব দুই- বনানী বিশ্বাস


প্রকাশের সময় : জুন ১০, ২০১৬, ৮:৩২ AM
আমার ফুলবাড়ীয়া র্পব দুই- বনানী বিশ্বাস

UNO- banani-02

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি ফুলবাড়ীয়া।আয়তন ৩৯৯ বর্গকিলোমিটার।১৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ফুলবাড়ীয়া উপজেলা।আয়তন জনসংখ্যা ও ভোগোলিক দিক দিয়ে এক একটি ইউনিয়নের বৈশিষ্ট আলাদা।ময়মনসিংহ জেলা শহর থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়ীয়া একটি শান্ত জনপদ।কোলাহল মুক্ত বিশুদ্ধ অক্সিজেন সমৃদ্ধ একটি কৃষিনির্ভর পাহাড়ি ভূমি এটি।

১৩টি ইউনিয়ন নাওগাঁ,পুটিজানা,কুশমাইল,ফুলবাড়ীয়া,দেওখলা,বালিয়ান,রাধাকানাই,আছিম,ভবানীপুর,কালাদহ,রাঙামাটিয়া এনায়েতপুরও,বাকতা।নাওগা, পুটিজানা,রাঙামাটিয়া,কালাদহ এই অঞ্বলের মাটি পাহড়ি মাটি।কৃষি ফসলের মধ্যে হলুদ, আদা, আনারস সবজি আখ বিখ্যাত। এখানকার মাটি অত্যন্ত উর্বর।বছরে কৃষক তিনবার ধান ঘরে তোলে।জমি কখনোই অনাবাদী থাকেনা।অথচ এই এলাকার ইরিগেশন সম্পূর্নরূপে ডিপ টিউবয়েলের উপর নির্ভরশীল।

নাওগা,রাঙামাটিয়ার পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে কিছু নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস।তারা ভীষন পরিশ্রমী ও জীবন যাপনে অতি সরল।তাদের অনেক প্রোগ্রামে আমি গিয়েছি।সংস্কৃতি চর্চায় তারা অত্যন্ত সমৃদ্ধ।অথচ তারা কিছুটা হলেও জনবিচ্ছিন্ন।তারা শিক্ষাদীক্ষায় এখন অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।তারপরও তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সযতনে আগলে রেখেছে।

নাওগাওয়ে রয়েছে একটি রাবার বাগান।অতি সুদৃশ্য সেই বাগান।রাবার গাছগুলি সারিবদ্ধ করে লাগানো যেদিক থেকেই দেখা যায় সেদিক থেকই এটি একই রকম সারিবদ্ধ।এই বাগানের ভিতরেই রাবার উৎপাদনের একটি কারখানা ও রয়েছে।নাওগা, রাঙামাটিয়া ও এনায়েতপুরে রয়েছে রিজার্ভ ফরেস্ট।এখানে সামাজিক বনায়ন হয়।অতি দরিদ্র মানুষ এই সামাজিক বনায়নে নিজেকে স্বাবলম্বী করেছে।রাঙামাটিয়াতে রয়েছে একটি বিশাল বিল। নাম তার” বড়বিলা”।জুলাই আগস্ট মাসে এই বিলটি ভরে যায় পদ্মফুলে।একসাথে এত ব্যাপক এলাকায় পদ্মফুল আমি কোথাও দেখিনি।সে দৃশ্য বর্ননাতীত।একবার দেখলে আর একবার মন যেতে চাইবে সেই পদ্মফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে। এনায়েত পুর ইউনিয়নে রয়েছে অর্কিড বাগান।বাংলাদেশের অর্কিডের পাইওনার এই দীপ্ত অর্কিড বাগান।এখানে রয়েছে কয়েকশো প্রজাতির অর্কিড। এরুপ আরো অসংখ্য নয়নাভিরাম সুন্দর সুন্দর স্পট রয়েছে ফুলবাড়ীয়াতে।

এখানে ৪টি প্রেসক্লাব রয়েছে।আমি উপজেলায় যোগদান করার পরপরই “ফুলখড়ি”পত্রিকার আজকের সভাপতি জনাব নুরুল ইসলাম খান আমার সাথে দেখা করেন।আমি আসার আগ পর্যন্ত তিনি সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখে আমাদের সাথে কাজ করেছেন।(তার বিষয়ে আমি পরে আরো লিখব।) এছাড়াও আরো অনেক পত্রিকার লোকজনের সাথে কাজ করেছি।তারা ফুলবাড়ীয়ার সুনাম এবং সম্মান নিয়ে সবসময় লিখেছেন।প্রেস ফুলবাড়ীয়ার হালিম এবং সাত্তার এর ফেইসবুক মিডিয়া একটি শক্তিশালী গনমাধ্যম হিসেবে কাজ করছে।তারা ফুলবাড়ীয়াকে নিয়ে সবসময় পজিটিভ পেজ ছাপেন।

এ জনপদের মানুষের জন্য রয়েছে ২০১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৭২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৬ টি মাদ্রাসা। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, তিনটি মহিলা কলেজ ও পাঁচটি সাধারন কলেজ।একটি উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ও চল্লিশটির ও অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।সরকারী অফিস বাদেও এখানে রয়েছে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ত্রিশটির ও অধিক এনজিও।

এখানকার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে ভালো অবস্থানে রয়েছে।মানুষজন অত্যন্ত শান্ত।তারা অকারন হানাহানি রক্তপাত চায়না।হরতালগুলোতেও এখানকার মানুষ অবাধে ও নিরাপদে চলাফেরা করেছে।
শান্ত শীতল সুনিবিড় ছবির মত সুন্দর আমার ফুলবাড়ীয়া।(চলবে)

https://www.bkash.com/