সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন

সবুজের স্বর্গে নীল নেশার আগ্রাসন – খন্দকার মাহমুদ হাসান সজীব

601বাঙালি জাতির ইতিহাস খুব সমৃদ্ধ ইতিহাস। জাতি হিসেবে এই জাতির রয়েছে নিজস্ব ভাষা ঐতিহ্য গ্রামীন ও লোকজ সংস্কৃতি। একটি দেশ জন্মলগ্ন থেকে সংগ্রাম করে বেড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত, সেটা দারিদ্র সেটা ক্ষুধা কিংবা ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস। বাঙালি জাতি বীরদর্পে বার বার লড়ে গছে, জীবন সংগ্রামে কখনও পিছু হটেনি। সময় বলে, বাংলাদেশ এখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মিরাকল। দেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। শিল্পায়ন ও যান্ত্রিক সভ্যতার এই লগ্নে আমাদের সমাজ নিয়ে কিংবা জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে, চিন্তা করার ফুসরত হয়ত আজ আমাদের কারও নেই।

কিন্তু এই দেশের অর্থনৈতিক ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের অংশীদার এই দেশের যুব সমাজের নৈতিক স্খলন (অবক্ষয়) এখন আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। এত কিছুর ভিড়ে সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দায়িয়েছে একটি নাম মাদক। সেই মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন আজ আমাদের সমাজ ও জাতির হৃদপিন্ডে আক্রমন করছে। সমাজ আখ্যানভাগটা পরিবর্তন করে দিতে চাইছে মাদকের নীল কালোয় মেশানো এক ধাঁ-ধাঁলো ধোঁয়াশাতে। সচেতন পাঠকদের মধ্যে মাদক বিষয়ে জানার আগ্রহ দেখা গেলেও কিন্তু অধিকাংশ জনস্রোত এই সব বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয় না, কিংবা পারে না। কিন্তু তারা কি জানে যে, পরবর্তী “সামাজিক সুনামী” হতে পারে এই মাদক! এই শৃঙ্খলিত সমাজে দুর্দন্ড প্রতাপে আঘাত হানতে পারে! আর আমাদের সাজানো গোছানো এই স্বপ্ন পুরীকে এক দু:স্বপ্নময় বিভীষাকায় পূর্ণ করে দিতে পারে মুহুর্তেই। আমি আমার এই লেখার মাধ্যমে পাঠকদের বিস্তারিত তথ্য ও উপাত্তসহ মাদকের উৎপত্তি, সমাজের এর বিস্তার, রাষ্ট্রীয় জীবনে মাদকের প্রভাব এবং সর্বোপরি মাদক সন্ত্রাস ও বানিজ্য নিয়ে বিশ্লেষণ মূলক আলোকপাত করব ধারাবাহিক ভাবে। যা এক মাদকবিহীন বাংলার স্বপ্নে আমাদের করনীয় কি তাও বলে দিবে। যা আমাদের সমাজকে সচেতন করবে আশা করি।

আমি না শুধু সমাজের সর্বস্তরের জনগনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ইতি ঘটবে এটা আমার বিশ্বাস।

ভূমিকা থাক মূল আলোচনায় আসা যাক। ধূমপান নিয়ে প্রথমে কিছু বলতে চাই। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে মাদকাসক্তদের ৯৮% এর প্রথম মাদকের হাতেখড়ি ধূমপান দিয়ে। ধূমপান নিয়ে আমরা কোন উচ্চবাচ্য করিনা বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু একবারও কি কেউ ভেবেছে, প্রতিদিন কত কোটি লোক সারা বিশ্বে ধূমপান করছে প্রতিনিয়ত! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় পরিসংখ্যা ব্যুরো সহ বিভিন্ন এনজিওগুলোর তথ্য ও উপাত্ত থেকে জানা যায় যে, আমাদের দেশের শতকরা ৪০% লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধূমপানের সাথে জড়িত যার বেশির ভাগের বয়স ১২ থেকে ৩০। যা আমাদের যুব সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করছে।

কেন ধূমপান?
কৈশোরের নবযৌবনে, প্রফোল্ল উত্তাপে যার সূচনা,
রক্তিম ঠোঁটে মাদকের শুভ্র ধোঁয়ার কণা,
একটি সুখটান তামাকজাত ধূমপান।

স্কুলের টিফিনের ফাঁকে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে একটি কৌতুহলী ভাবনা থেকেই যার সূচনা। বেশিরভাগ ধূমপায়ী নবযৌবনের স্নোতে গা ভাসিয়েই হয়ে থাকে। এখনকার যুবকদের কাছে ধূমপান আধুনিকতার অংশ হিসেবে চলে এসেছে হালের ফ্যাশন হিসেবে। তারা মনে করে ধূমপান করা একটি ক্রেডিট। (চলবে…)
লেখক- MSS in Victimology And Restorative Justice, University of Dhaka

Please Share This Post in Your Social Media

কপিরাইট © ফুলবাড়িয়ানিউজ২৪ ডট কম ২০২০
Design & Developed BY A K Mahfuzur Rahman