রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন

শপথ গ্রহণ করা হলো না হবি চেয়ারম্যানের

300000আব্দুস ছাত্তার, ফুলবাড়িয়া নিউজ 24ডটকম : দ্বিতীয় মেয়াদে ৮নং রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ করা হলো না হ র ম শহীদুজ্জামান আকন্দের (হবি চেয়ারম্যান)। ২০০৯সালের সেপ্টেম্বরে বাবুগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি নিজেকে আবারও মানুষের সেবায় মনোনিবেশ করার আশা করেন। ১৯৮৪সালে তিনি একবার অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় অবসর সময় তিনি মানুষের সেবা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি এক ছেলে এক মেয়ের জনক ছিলেন। তাঁর একমাত্র ছেলে সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে কখনো পিছপা হননি। একমাত্র ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া লেখা করে সাংবাদিকতা করছেন আর একমাত্র মেয়েকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী অর্জনকারী প্রিন্সের সাথে বিয়ে দিয়েছেন- প্রিন্স নিজে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফল নিয়ে একটা বিশাল প্রজেক্ট তৈরি করছেন।
শেষ বয়সে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে টেনশন নেই। ইউনিয়নের নামে যত বরাদ্দ আছে সব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিব। আর তোমার (ছেলে জুলহাস) মাধ্যমে কিছু করতে চাই, যেন রাঙ্গামাটিয়ার মানুষ মনে করে এটা হবি চেয়ারম্যান করে দিয়েছেন।
গত ৭মে অনুষ্ঠিত ৪র্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন। ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে আদর্শবান হবি চেয়ারম্যানের বিজয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
একমাত্র ছেলে বাবার বিভিন্ন স্মৃতির কথা তুলে ধরে বলেন, আমার বাবা আমার সব। কিন্তু তিনি কিছু না বলে কিভাবে চলে গেলেন? তিনি সব সময় রাঙ্গামাটিয়াকে গোছানোর কথা ভাবতেন। তিনি বলতেন, কেশরগঞ্জ টু বাবুগঞ্জ রাস্তা ডিসেম্বরের মধ্যে পাকা করতে হবে। কোথায় কোথায় যেতে হবে আমি বললে সেখানে তিনি যাবেন। তিনি মানুষের কাছে বলতেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।
আব্বা আমার বাসায় এসেছিল গত বুধবার। আমার বাসায় আমার আম্মা এসেছিল কয়েকদিন আগে। তিনি কিছু দিন যাবত আমার বাসায় থাকছিলেন উনাকে নেয়ার জন্য আব্বা এসেছিলেন। কিন্তু তিনি জীবিত ফিরে যেতে পারলেন না। রাঙ্গামাটিয়ায় নিজ বাড়ীতে ফিরে গেলেন তিনি লাশ হয়ে। গত ২৫দিন আগে আমার আব্বার মা মারা গেছেন, সেই নামাজে জানাজায় তিনি (আব্বা) ইমামতি করেছেন। কিন্তু আমার দাদীর সাথে আমার বাবাও চলে যাবেন এটা আমি কখনো ভাবিনি। আব্বা আমাকে কোন পথ দেখিয়ে যাননি।
আমার খালু (স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দিন এ্যাড.) ঢাকায় গত বৃহঃ বার আব্বার সাথে দেখা করেছেন। আব্বার মৃত্যুর কথা শুনে উনি আমার সাথে ফোনে ২৫মিনিট কথা বলেছেন, উনি অনেক কেঁদেছেন।
আবেগাপ্লুত কন্ঠে জুলহাস আলম বলেন, আব্বা আমার বাসায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, উনাকে উত্তরা একটি প্রাইভেট কিনিকে ভর্তি করিয়েছিলাম, উনি আমাকে বললেন উনি বাঁচবেন না, কারণ আমার দাদাও এভাবে মারা গিয়েছিলেন। কারো প্রতি আমার আব্বার কোন রাগ ছিল না। হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থায় তিনি আমাকে বলেছিলেন রাঙ্গামাটিয়ার খবর কী? আপনারা আমার আব্বার জন্য দোয়া করবেন।
উল্লেখ্য গত ৭জুন বিকেল ৩.১৫মিনিটে রাজধানীর উত্তরা একটি বেসরকারী কিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হবি চেয়ারম্যান। ৮জুন ৩দফা নামাজে জানাজা শেষে তাকে রাঙ্গামাটিয়াস্থ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

কপিরাইট © ফুলবাড়িয়ানিউজ২৪ ডট কম ২০২০
Design & Developed BY A K Mahfuzur Rahman