বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
ফুলবাড়িয়া নিউজ 24ডটকম : বাংলায় রায় লেখার কথা ভাবছেন এবার স্বয়ং প্রধান বিচারপতি। এর আগে বাংলায় রায় লেখার কথা অনেক বিদগ্ধ আইনজীবী বলেছেন। তা অবশ্য এখনো চালু হয়নি। উচ্চ আদালত তা চালু করলে সন্দেহ নেই অন্যান্য বিচারপতির মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। কারণ ইতিমধ্যে নিম্ন আদালতে তা চালু হয়েছে। যে জাতি তার মাতৃভাষাকে সন্মান দিয়ে আদালতের রায় লেখা থেকে শুরু করে জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চায় অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সংকল্প করে এবং তা বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে দেশ ও দশের পরিবর্তন নিয়ে আসে এমন উদাহরণ বিশ্বে বিরল নয়। কিন্তু আমাদের সংকল্প আছে, আশ্বাস দেয়ার মনোবৃত্তি আছে, কঠিন সংকল্প বাস্তবায়নের পরিশ্রমের ইচ্ছায় ঘাটতিও আছে।
উচ্চ আদালতের কার্যক্রমে মাতৃভাষার প্রচলন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তিনি যখন বলেছেন তখন অন্যান্য বিচারপতিরা তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতেই পারেন। এজন্যে প্রস্তুতি দরকার, একাডেমিক থেকে শুরু করে দাফতরিক প্রস্তুতির একটা পথ চলা শুরু হতেই পারে।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রধানবিচারপতি তার ই্চ্ছা প্রকাশ করেন।
মাতৃভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতি শীর্ষক এ আলোচনার সভার আয়োজন করে দেশীয় সাংস্কৃতিক আইনজীবী পরিষদ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এখানে একটা কথা উঠেছে, মাতৃভাষায় আমাদের বিচার অঙ্গনের কার্যাবলী পরিচালিত হবে। এটা সত্যিই দরকার। এটা নিম্ন আদালতে চালু হয়েছে। আমি মনে করি এটি আমাদের উচ্চ আদালতে চালু করা উচিত। আমাদের কয়েকজন বিচারক বাংলায় রায় লেখেন। আমিও চিন্তা করছি দুই একটা রায় বাংলায় লিখবো।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে আমরা দেশজ রীতিনীতি ও মূল্যবোধকে বিসর্জন দিতে শুরু করেছি। আমাদের তরুণ সমাজ দেশীয় আবহাওয়ায় বিদেশি জীবনবোধকে গ্রহণ করে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে আমরা ভুলতে বসেছি আমাদের ঐতিহ্য এবং আবহমানকাল ধরে লালিত আমাদের দেশি সংস্কৃতি। সে বিবেচনায় দেশীয় সাংস্কৃতিক আইনজীবী পরিষদের আজকের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আমাদের মনে রাখতে হবে মাতৃভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতির পারস্পরিক সম্পৃক্তি আমাদের জাতি গঠনে ও অতীত সংগ্রামে পাথেয় হয়েছে। আর সে কারণেই আমাদের মাতৃভাষাকে এবং দেশীয় সংস্কৃতিকে আমাদের ধারণ ও লালন করতে হবে। করতে হবে এর সৃজনশীল ও কার্যকর রূপান্তর।
দেশীয় সাংস্কৃতিক আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ চন্দ্রকরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ড. বশির আহমেদ, বার কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ।