রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
ফুলবাড়ীয়া নিউজ 24 ডটকম : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে একম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সফরকারীদের ৫৮ রানে পরাজিত করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে একদিনের ক্রিকেটে ঘরের মাটিতে টানা পাঁচটি সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। সিরিজে বাংলাদেশ এখন ২-০ তে এগিয়ে। টাইগার-সমর্থকরা আরেকটি ‘হোয়াইটওয়াশ’র প্রতীক্ষায়।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের দেওয়া ২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাশরাফি-মুস্তাফিজ-সানিদের বোলিং তোপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ৭৮ রানে প্রথমসারির চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় সফরকারীরা। তবে সিকিন্দার রাজাকে সঙ্গে নিয়ে সেই চাপ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যান অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা। শুধু তাই নয়, চিগাম্বুরা ও সিকান্দার রাজার ব্যাটিং স্বাগতিকদের প্রতি চোখও রাঙ্গাচ্ছিল। ৭৩ রানের জুটি গড়ে ক্রমশ ব্যবধান কমিয়ে আনছিলেন তারা। কিন্তু পেসার আল-আমিন হোসেন সেই জুটির ভাঙন ধরান। দুর্দান্ত বোলিংয়ে এক ওভার ব্যবধানে দুই ব্যাটসম্যানকেই সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি। তার বলে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ইমরুল কায়েসকে ক্যাচ দিয়ে প্রথম সাজঘরে ফিরেন সিকান্দার রাজা। পরে সেই ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি হয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক চিগাম্বুরা। আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেন ৪৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
আর এখানেই ভেঙে যায় সফরকারীদের জয়ের স্বপ্ন। এ জুটি ভেঙে যাওয়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। দলীয় সংগ্রহে ৩২ রান যোগ হতেই একে একে আউট হন ওয়ালার, জোঙ্গউই, পানিয়াঙ্গারা, ক্রেমার। শেষপর্যন্ত ৪৩.২ ওভারে ১৮৩ রানে থেমে যায় সফরকারীদের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে কাটার বয় মুস্তাফিজ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন। আল-আমিন ও নাসির নেন ২টি করে উইকেট। এ ছাড়া দলপতি মাশরাফি দখল করেন ১টি উইকেট। আর অন্যটি রানআউট।
এরআগে সোমবার দুপুরে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলীয় ৩২ রানেই আউট হন ওপেনার তামিম ইকবাল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো বাংলাদেশ লড়াই করার মতো পুঁজি পায় ওপেনার ইমরুল কায়েস ও অলরাউন্ডার নাসির হোসেনের ব্যাটে। দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে দলে ফেরা ইমরুল কায়েস খেলেন সর্বোচ্চ ৭৬ রানের ইনিংস। ক্রেমারের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৮৯ বলের দাপুটে ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ চার ও ৪ ছক্কায়।
ইমরুল কায়েস ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটসম্যান এ ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির দেখা পাননি। তবে অলরাউন্ডার নাসির হোসেন খেলেন ৪১ রানের কার্যকর ইনিংস। ৫৩ বল মোকাবেলায় ৩ বাউন্ডারিতে এই রান করেন তিনি। এ ছাড়া গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম ২১, সাব্বির রহমান ৩৩, তামিম ইকবাল ১৯ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৩ রান সংগ্রহ করেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে পানিয়াঙ্গারা ৩টি, ক্রেমার ও মুজারাবানি ২টি করে এবং উইলিয়ামস ও জোঙ্গউই ১টি করে উইকেট নেন।
গতবছর জিম্বাবুয়েকে দিয়েই শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের টানা সিরজ জয়ের মিশন। এরপর পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার পর আবারও সেই জিম্বাবুয়েÑঘরের মাঠে এই হলো বাংলাদেশের টানা পাঁচ ওডিআই সিরিজ জয়ের গল্প। যে গল্প বাংলাদেশ ক্রিকেটের সোনালি ভবিষ্যতের গানই শোনাচ্ছে। উঁচু থেকে আরও উঁচুতে নিজেদের নিয়ে যাবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। সেই প্রতিশ্রুতির গান আরও একবার শোনা গেল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ একাদশ : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, আরাফাত সানী, আল-আমিন হোসেন ও মস্তাফিজুর রহমান।
জিম্বাবুয়ে একাদশ : এল্টন চিগুম্বুরা (অধিনায়ক), চামু চিবাবা, রেগিস চাকাভা, ক্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, লুক জংউই, গ্রায়েম ক্রেমার, তিনাশে পানিয়াঙ্গারা, তাউরাই মুজারাবানি ও মেলকম ওয়ালার।
সূত্র- ইন্টারনেট