ফুলবাড়িয়া নিউজ 24ডটকম : ২০০১ সালে ফুলবাড়ীয়া পৌরসভা স্থাপিত। এরপর দু’বার পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০২ সালে প্রথম পৌর নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মো. মজিবুর রহমান। ২০০৮ সালে মডেল নির্বাচনে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন।
ফুলবাড়ীয়ায় আ’লীগ মনোনিত প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া (নৌকা), বিএনপি মনোনিত প্রার্থী ওমর ফারুক (ধানের শীষ), নির্দলীয় প্রার্থী (বিএনপি বিদ্রোহী) চান মাহমুদ (জগ) ও জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী জিয়াউর রহমান খান (লাঙ্গল)। তৃতীয়বারের মতো কে হবে পৌর পিতা এনিয়ে জল্পনা কল্পনার অন্ত নেই সাধারন ভোটারের মাঝে।
ফুলবাড়ীয়া পৌরসভায় আ’লীগের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বিএনপির সমর্থক বেশি হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী চান মাহমুদের কারনে কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী উমর ফারুক মাস্টার আর আ’লীগের একক প্রার্থী হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ফুরফোরা মেজাজে মোঃ গোলাম কিবরিয়া। যতই নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে ধীরে ধীরে দলীয় মনোনিত প্রার্থীর পে সুবাতাশ বইছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন ভোটাররা। আ’লীগের নেতাকমীরা এ আসনটি পুনরায় ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন। আর বিএনপির নেতাকর্মীর এ আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। নির্দলীয় প্রার্থী (বিদ্রোহী প্রার্থী) চান মাহমুদও সমানে সমান লড়ছে। ভোটারদের মতে, শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে নৌকা, ধানের শীষ ও জগ প্রতিকের মাঝে। অপরদিকে জাতীয় পার্টীর মনোনিত প্রার্থী মোঃ জিয়াউর রহমান খান নির্বাচনী মাঠে এখনো আলোচনায় আসতে পারেননি ভোটারদের মাঝে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন চলছে ব্যক্তি পর্যায়ে যোগাযোগ। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে রাস্তাঘাট, পয়:নিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ আধুনিক মডেল পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
ফুলবাড়ীয়া পৌরসভা ৯ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ২০ হাজার ৫শ ৪৫ জন। তারমধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৪৩৮, আর মহিলা ভোটার ১০ হাজার ১০৭ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০টি, ভোট করে সংখ্যা ৬০টি, অতিরিক্ত ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৬টি। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ১০ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৫ টি ভোট কেন্দ্র ঝুকিপূর্ন। তার মধ্যে অধিকঝুকিপূর্ন হলো জোরবাড়ীয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্র।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডে সাধারন কাউন্সিলর পদে যাদের সাথে লড়াই হবে চকরাধাকানাই ও লাহেড়ী পাড়া নিয়ে ১ নং ওয়ার্ডে ১৬৩৯ ভোট নিয়ে কাউন্সিলর পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মূলত লড়াই হবে মোঃ সেকান্দর আলী (উটপাখি) ও আব্দুল মান্নানের (পানির বোতল) মধ্যে। চকরাধাকানাই ও ফুলবাড়ীয়া এলাকা নিয়ে ২ নং ওয়ার্ডে ২১৬৭ ভোট নিয়ে ৩ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে লড়াই হবে ত্রিমূখী, আঃ মালেক সেলিম (উটপাখি), মোঃ শাহাব উদ্দিন (পাঞ্জাবি) ও ফজলুল হক ফজি (ডালিম) এর মধ্যে। ৩ নং ওয়ার্ড পৌরসভার সবচেয়ে গুরুত্বপূন। ২৪৮১ ভোট নিয়ে ছফর আলী বুল (উটপাখি) এ.এস এম রফিকুল ইসলাম (পাঞ্জাবি) ও মোঃ হয়রত আলী (ডালিম) এই ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এ ওয়ার্ডেও ত্রিমুখী। ১৭৬৩ ভোট নিয়ে কুশমাইল ৪ নং ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। লড়াই হবে মোঃ জালাল উদ্দিন (উটপাখি), সাইফুল ইসলাম (পাঞ্জাবি) ও আঃ মালেক (পানির বোতল)। পৌরসভার সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ৫ নং ওয়ার্ড কুশমাইল চান্দের বাজার। ২১০৮ ভোট নিয়ে পৌরসভায় সবচেয়ে বেশি কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এ ওয়ার্ডে। মোঃ আব্দুল লতিফ (উটপাখি), মোঃ আকবর হোসেন মুন্সি (ফাইল কেবিনেট), আঃ হাসেন আলী (ব্লাকবোড), মোঃ মুঞ্জুরুল হক (টেবিল লেম্প), আবু তাহের (মাইক) লড়াই হবে মুলত ৫ জনের মধ্যে। ৩৬১৮ জন ভোটার নিয়ে গড়ে উঠা ৬ নং ভালুকজান ওয়াড প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ জন। শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে সাংবাদিক এস.এম গোলাম ফারুক আকন্দ (ঢেঁড়স) ও মোঃ শাহজাহান শিকদার ( পানির বোতল)।
১৯৬৫ ভোট নিয়ে গড়ে উঠা ৭ নং গৌরিপুর ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এওয়ার্ডে শেষ পর্যন্ত লড়াই হবে এবি এম সিদ্দিক (উটপাখি) ও মোঃ চান মাহমুদ সরকার (ডালিম), রফিকুল ইসলাম শিকদার (ঢেড়শ)।
২৫২৪ ভোট নিয়ে পৌরসভায় ভোটের দিক থেকে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে ৮ নং মধ্যপাড়া ওয়ার্ড। এওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন নবীন প্রবীণ ৪ জন। লড়াই হবে শহিদুল ইসলাম (পাঞ্জাবি), কাজী ইমান আলী (পানির বোতল), আমজাদ হোসেন (ডালিম)। ২২৮০ ভোট নিয়ে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে ৩ জন প্রার্থী তাদের মধ্যে লড়াই হবে ত্রিমূখী। চান মিয়া (পাঞ্জাবি) আলী আহসান রানা (টেবিল ল্যাম্প) ও আঃ মান্নান (উটপাখি)। আর মাত্র দুই দিন এরপরও নির্বাচনের হিসাব নিকাশ সমাপ্ত হতে যাচ্ছে। কে হবে তৃতীয় বারের মতো পৌর পিতা ও নব নির্বাচিত সংরিক্ষত কাউন্সিলর ও সাধারন কাউন্সিলর তা নিয়ে এখনও ভোটারদের মাঝে হিসাব নিকাশের কোন কমতি নেই।
আপনার মতামত লিখুন :