সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন
ফুলবাড়িয়া নিউজ 24ডটকম : প্রথম দফায় ইউপি নির্বাচনের ৭২১ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, গুলাগুলি, মারপিট, হামলা ও কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কুমিল্লার দেবীদ্বারে একজন কিশোর ও ঝালকাঠি সদর উপজেলায় একজন নিহত ও অন্তত পাঁচশতাধিক আহত হয়েছে।
ভোলা থেকে আমাদের প্রতিনিধি অচিন্ত মজুমদার বলেন, ভোলার বিভিন্ন কেন্দ্রে সহিংসতায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত তিনশতাধিক আহত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জেলার ৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে। জালভোট ও কারচুপির অভিযোগে পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কাচিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেন।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি এবি সিদ্দিক জানান সদর উপজেলায় এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর ভাই আবুল কাশেম সিকদার নামে একজন নিহত হয়েছে।
বরিশাল প্রতিনিধি জানায় জেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নে জালভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে আহত হয় শতাধিক। এজন্য কড়াপুর ইউনিয়নে সকাল সাড়ে ৮টায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এছাড়া দড়িচর ইউনিয়নের খেজুরচরসহ বিভিন্ন জায়গায় অনিয়ম ও সহিংসতা হয়েছে। উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নে জামবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কেন্দ্রে সংঘর্ষ ও ব্যালট বাক্স ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আমাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি শিবলী জানান জেলার দেবীদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বড়কান্দা কেন্দ্রের বাইরে ২ মেম্বার প্রাথীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জুয়েল নামে এক কিশোর নিহত ও ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে আরো ৫ জন।
এছাড়া সাতক্ষীরার কুমিরার ভাগবা ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালানোর সময় পুলিশের গুলিতে ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি। এঘটনায় আটক করা হয়েছে ৪ জনকে। এখানে ১২টি ভোট কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় কেন্দ্র দখল নিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এখানে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয় ২৫ জন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ২ জনকে আটক করেছে। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার বিএনপির ৪ জন এবং স্বতন্ত্র ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধি।
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি নাদিম মোহাম্মাদ জানান জেলার ১০টি কেন্দ্রে সংঘর্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছে। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুতই এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে।
বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার সদর ইউয়িনের ৫ নং কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল দেয়ার প্রতিবাদ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। বরগুনার বুড়িরচর ইউনিয়নে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন বিএনপি প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এছাড়া ঢাকার দোহার উপজেলার ৫টি ভোটকেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ হয়েছে। উপজেলাটির অধিকাংশ পুরুষ প্রবাসী হওয়ায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারের সংখ্যাই বেশি। আবার ময়মনসিংহ থেকেও কোন সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এনামুল কবীরকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করার সময় হাতেনাতে আটক করে পুলিশ।
তবে নোয়াখালীতে কোন সহিংসতা না ঘটলেও হাতিয়ার চরকিং বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা।
আমাদের পিরোজপুর প্রতিনিধি খসরু জানান বড়মাছুয়া ইউনিয়নের মধ্য বড়মাছুয়া ভোটকেন্দ্রে দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে এক সাংবাদিকসহ ৮জন আহত হয়েছে। এছাড়া একটি ভোট কেন্দ্র থেকে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোলিং এজেন্টেদের বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পটুয়াখালীর চাকামাইয়া ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে আহত হয় মেম্বার প্রার্থীসহ তিনজন।
এছাড়া সিরাজগঞ্জে ৭ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৩০ জন, বাগেরহাটে ২ জন, ও শেরপুর, ঝিনাইদহ, মাদারীপুরসহ, কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র- আমাদের সময় ডটকম