মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন

নাইকো দুর্নীতি মামলায় আত্নসমর্পণ করে জামিন পেলেন খালেদা

6666ফুলবাড়িয়া নিউজ ২৪ডটকম : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে আগামী ২৮ ডিসেম্বর এ মামলার চার্জগঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করে ওইদিন খালেদাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
সোমবার হাইকোটের নির্দেশ অনুযায়ী আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করেন মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। জামিন আবেদনের উপর শুনানি শেষে ঢাকার নয় নম্বর বিশেষ জজ আমিনুল ইসলাম তার জামিন মঞ্জুর করেন ।
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার প্রধান আইনজীবী এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাকে সহায়তা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমসহ বিএনপির আইনজীবী নেতারা। দুদকের পক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন মোশাররফ হোসেন কাজল। এর আগে সোমবার বেলা সোয়া এগারোটায় গুলশানের বাসা থেকে আদালতের উদ্দেশ্য বের হন বেগম জিয়া। বেলা বারোটা ২৫ মিনিটে এজলাস কক্ষে পৌঁছান তিনি । ১৫ মিনিট আদালতে অবস্থান শেষে এজলাস থেকে বের হয়ে যান বেগম জিয়া। এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে আসাকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় আদালত অঙ্গনে। র‌্যাব, পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিল। সীমিত সময়ের জন্য ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য , চলতি বছর ১৮ জুন এই মামলা সংক্রান্ত রিটের রুল খারিজ করে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমদ নিু আদালতে আদেশ পৌছানোর ২ মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ প্রদান করেন।
হাইকোর্টের এ রায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিু আদালতে পৌঁছলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ মো. আমিনুল ইসলাম ৩০ নভেম্বর খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য করেন।
চার্জশিটের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিু আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন। চলতি বছর ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।
উল্লেখ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলাটিতে ২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় স্থায়ী জামিন পান বেগম জিয়া।
নাইকোকে কাজ দিয়ে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার অভিযোগে খালেদার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও একই দিনে আরেকটি মামলা করেছিল দুদক।
আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ২০১০ সালের মার্চে হাইকোর্ট ওই মামলা বাতিল করে দেয়।
মামলাটিতে খালেদা জিয়া ছাড়া আরও ১০ জন আসামি রয়েছেন। মামলার বাকি আসামিরা হলেনÑ চারদলীয় জোট সরকারের আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা কাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া (সিলভার সেলিম) এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

Please Share This Post in Your Social Media

কপিরাইট © ফুলবাড়িয়ানিউজ২৪ ডট কম ২০২০
Design & Developed BY A K Mahfuzur Rahman