মঙ্গলবার, ০৬ Jun ২০২৩, ১২:০০ পূর্বাহ্ন

দেশে দুই কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত

hhhhhhhhhhhhhhhhhhhhhhhhhh-400x156ফুলবাড়িয়া নিউজ 24 ডটকম : দেশে দুই কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। যাতে বছরে মারা যাচ্ছে প্রায় ৪০-৫০ হাজার মানুষ। কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দুইদিনের ১১তম জাতীয় সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরো উঠে এসেছে, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ কিডনি রোগের অন্যতম কারণ। এ দুই কারণ এড়াতে চর্বি জাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাওয়া, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া ও ধূমপান বন্ধ করতে হবে।

সোমবার সকালে ১১তম জাতীয় সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। বেলা ৩টায় প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশীদের সভাপতিত্বে মিরপুরে হাসপাতাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মুহিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনি ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ।

সম্মেলনে দেশ-বিদেশের প্রায় ২৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিডনি রোগ ও প্রতিরোধ, হেমোডায়ালাইসিস ও পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস, কিডনি সংযোজন প্রভৃতি নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করেন। এতে দেশের প্রায় ৩ শতাধিক চিকিৎসক অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, দেশের দুই কোটি লোক উচ্চরক্তচাপে এবং ৮০ লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অথচ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ৪০ থেকে ৬০ ভাগ এবং উচ্চরক্তচাপে আক্রান্তদের ৫০ থেকে ৬০ ভাগই জানেন না যে তাদের এসব রোগ হয়েছে। যাদের উচ্চরক্তচাপ ধরা পড়েছে অথচ নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের ১৫ থেকে ২০ ভাগ এবং যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ক্রমান্বয়ে আক্রান্ত হয় কিডনি রোগে।

বক্তারা আরও জানান, বিভিন্ন রোগে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদেরও ২০ থেকে ২৫ ভাগের একুইট কিডনি ফেইলর ধরা পড়ে। সবমিলিয়ে দেশে দুই কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। এতে বছরে মারা যাচ্ছে ৪০-৫০ হাজারের মতো মানুষ। কিডনি রোগে চিকিৎসা ডায়ালাইসিস বা ট্রান্সপ্ল্যান্ট ব্যয়বহুল ও তা মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ বহন করতে পারে। ৭৫ শতাংশ টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারে না। বক্তাদের মতে, ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে প্রাথমিক পর্যায়ে দ্রুত চিকিৎসা নিলে, এসব বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা গেলে কিডনি রোগ প্রতিরোধ অনেকাংশেই সম্ভব।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান বলেন, আমাদেরকে যাকাত প্রদানের মতো সামাজিক কর্মকা-েও আড়াই শতাংশ সময় ব্যয় করতে হবে। তিনি কিডনি রোগ প্রতিরোধে সারাদেশে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের আহবান জানিয়ে বলেন, যারা যে জেলায় বসবাস করেন সেখান থেকেই সচেতনতামূলক মানবিক কর্মসূচি গ্রহণ করুন। কেননা কিডনি রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।

বিএমএ সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান বলেন, কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে নিরাময় করা সম্ভব। এজন্য কিডনি রোগ হবার আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, কিডনি রোগের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল- প্রথমদিকে এর কোনো উপসর্গ থাকে না। কিন্তু যখন উপসর্গ ধরা পড়ে ততক্ষণে কিডনির প্রায় ৭৫ ভাগই বিকল হয়ে পড়ে। তিনি জানান, কিডনি রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। এজন্য কিডনি রোগ হবার আগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। এই রোগ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা, অতিরিক্ত লবণ পরিত্যাগ, ফাস্টফুড, চর্বি জাতীয় ও ভেজাল খাবারসহ ধূমপান বর্জন করার পরামর্শ দেন তিনি।
সূত্র-  আমাদের সময়

Please Share This Post in Your Social Media

কপিরাইট © ফুলবাড়িয়ানিউজ২৪ ডট কম ২০২০
Design & Developed BY A K Mahfuzur Rahman