সোমবার, ০৫ Jun ২০২৩, ১১:০৩ অপরাহ্ন
মশিউর রহমান কাউসার, গৌরীপুর : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও প্রশাসনের সার্বিক অব্যবস্থাপনার কারনে ভেস্তে যেতে বসেছে হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি ধরে চাল বিতরন কর্মসূচী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রামে আনুষ্ঠানিকভাবে উক্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। জানা গেছে গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নে ২৩ সেপ্টেম্বর এ কর্মসূচীর চাল বিতরন শুরু হয়। সুবিধাভোগী হতদরিদ্রদের তালিকা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি কর্মসূচী পুরোদমে শুরু হয় চলতি মাসের ২য় সপ্তাহে। এতে নির্ধারিত সময় থেকে স্বল্পমুল্যে চাল ক্রয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে স্থানীয় হতদরিদ্ররা। এদিকে এ উপজেলায় ১০ টি ইউনিয়নে ৩৬ জন ডিলার নিয়োগের কথা থাকলেও ২০১১ ইং তারিখের নীতিমালা অনুসরন করে ২০ জন ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন উপজেলা তালিকা যাচাই কমিটি। সেসময় তেমন প্রচার না থাকায় ২০ জন ডিলারের বিপরীতে আবেদন জমা হয়েছিল ৩৫ জনের। নতুন নীতিমালায় আরো ১৬ জন ডিলার নিয়োগের নিমিত্তে ৬ অক্টোবর উপজেলার নির্বাহী অফিসারের কক্ষে তালিকা যাচাই কমিটির মিটিং হয়। উক্ত মিটিংয়ে নতুন ডিলার নিয়োগের সিদ্ধান্তটি রহস্যজনক কারনে গোপন রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার মাওহা ইউনিয়নে ভূটিয়ারকোনা বাজারে ডিলার আব্দুল জব্বার ও বীর আহাম্মদপুর বাজারে মাসুদ করিমের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে চাল ক্রয়ের জন্য কোন হতদরিদ্র কার্ডধারীর ভীড় নেই। এসময় আব্দুল জব্বার জানায় সারাদিনে মাত্র ১৩০ জন ও মাসুদ করিম জানায় মাত্র ১০ জন কার্ডধারীর মাঝে চাল বিক্রি করেছেন। স্থানীয় লোকজন জানায় এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ন কার্ড বিতরন না করায় মাওহা ইউনিয়নে ডিলারদের দোকান থেকে হতদরিদ্ররা চাল ক্রয় করতে পারছেনা। শুধু মাওহা ইউনিয়ন নয় অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে ডিলারদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ ওঠেছে। এক্ষেত্রে প্রতিদিনের বিক্রিত চালের মাষ্টার রোল ট্যাগ অফিসারগন ওই দিনই সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ডিলার অভিযোগ করে বলেন খাদ্যগুদাম থেকে প্রতি বস্তায় তাদেরকে ২/৩ কেজি চাল ওজনে কম দিয়ে থাকেন। গৌরীপুর ভারপ্রাপ্ত খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা সোহেল রানা ওজনে কারচুপির বিষয়টি ডিলারদের মনগড়া বলে মন্তব্য করেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তারাপদ চক্রবর্তী বলেন নতুন নীতিমালার কাগজপত্র আমাদের হাতে বিলম্বে আসায় পুরাতন নীতিমালা অনুসরন করে ১ম পর্যায়ে ২০ জন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন নীতিমালায় নিয়োগপ্রাপ্ত আরো ১৬ জন ডিলারের মাধ্যমে আগামী মাসে চাল বিতরন শুরু করা হবে। চাল বিতরনে অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন যেসব ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত সম্পূর্ন কার্ড বিতরন করা হয়নি সেসব ইউনিয়নে দ্রুত কার্ড বিতরনের জন্য সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।