খুন করে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো জঙ্গিরা, বাধা দেন এসআই ফারুক


প্রকাশের সময় : জুলাই ৫, ২০১৬, ১০:৩৬ AM / ১৫৪
খুন করে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো জঙ্গিরা, বাধা দেন এসআই ফারুক

first-siফুলবাড়িয়া নিউজ 24ডটকম : গুলশানের রেস্টুরেন্টে হামলাকারী জঙ্গিরাও খুন করে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো। জিম্মি করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তবে পুলিশের এক উপ পরিদর্শকের (এসআই) বাধায় নিজেরা বাঁচতে অন্যদেরও জিম্মি করে হামলাকারীরা। এমনটি জানিয়েছেন গুলশান থানার এসআই ফারুক আহমদ। তিনিই প্রথম চারজন কনস্টেবল নিয়ে হাজির হন গুলশানের ওই রেস্টুরেন্টে। তার বাধায় পালিয়ে যেতে পারেনি হামলাকারীরা। এসআই ফারুক বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।

এসআই ফারুক সোমবার রাতে জানান, ওইদিন (১ জুলাই) রাতে গুলশান থানার ওসি সিরাজুল আলম স্যার আমাকে ফোন করে বলেন, গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। আমাকে তাড়াতাড়ি সেখানে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। আমি তখন ইউনাইটেড হাসপাতালের পেছনে ছিলাম। রাত ন’টার আগে বা পরে চারজন ফোর্স নিয়ে আমি ৭৯ নম্বর সড়কে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি একটি পাজেরো গাড়ি দাঁড় করানো। গাড়ির সামনে একটা ছেলে। এরপর রেস্তোরায় সীমানার ভেতরে ঢুকে দেখি আরেকটা গাড়ির পাশে একজন বিদেশি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এসময় পাশেই দাঁড়ানো তাঁর গাড়ির চালক ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে।’ ফারুক বলেন, এসময় আমি কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে সাথেসাথেই দেখি ৪/৫টা ছেলে রেস্তোরাঁয় ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। তাদের কাঁধে ব্যাগ ও হাতে অস্ত্র। বয়স আনুমানিক ২৫-২৬ বছর। তাদের বেরিয়ে আসতে দেখে আমি আমার সাথের কনস্টেবলদের গুলি ছুঁড়তে বলি। কনস্টেবলরা গুলি ছুঁড়লে ওই ছেলেরা গ্রেনেড চার্জ করে। এতে আমার সাথে থাকা দু’জন কনস্টেবল গুরুতর আহত হয়। এসময় আমি আমার ড্রাইভারকে আহত কনস্টেবলদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি। এবং আলমগীর নামের আরেক কনস্টেবলের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে আমি গুলি ছোঁড়া শুরু করি।

তিনি বলেন, আমরা গুলি ছোঁড়ার পর ওই ৪/৫টি ছেলে রেস্তোরাঁর ভেতরে চলে যায় এবং রেস্তোরাঁর মূল দরজা লাগিয়ে দেয়। এসময় তারা রেস্তোরাঁর দু’তলায় উঠে আমাদের উদ্দেশ্য করে গ্রেনেড চার্জ করতে থাকে। তবে গ্রেনেড আমার শরীরে না লেগে পাশের গেইটে এসে পড়ে। সাথেসাথেই আমি গুলশান জোনের ডিসি স্যারকে (পুলিশের উপ কমিশনারকে) বিষয়টি জানাই। তিনি ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে হাজির হন। এরপর বনানী ও গুলশান থানা এবং ডিবির পর্যাপ্ত ফোর্স আসে। তখন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

এসআই ফারুক বলেন, আমার মনে হয় জঙ্গিদের মূল টার্গেট ছিল পূর্বের ন্যায় হত্যা ক‌রে পালিয়ে যাওয়া। জিম্মি করার ইচ্ছা তা‌দের ছিল না। বিদেশিদের হত্যা করেই তারা পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো। আমি এক দুই মিনিট পরে গেলে হয়তো তারা পালিয়ে যেতো। এসআই ফারুক ৭টি স্প্রিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হ‌য়ে এখনও ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। – আমাদের সময় ডটকম