ফুলবাড়িয়া নিউজ ২৪ডটকম : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের দুই পরিবার কারাগারে প্রবেশ করেছে। এরআগে দুই পরিবারেকেই ডাকে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
দেখা করতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রীসহ তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায় ২৬ জন এসেছেন।
শনিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে টেলিফোনের মাধ্যমে ওই দুই পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয়।
এর আগে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানবতা অপরাধের দায়ে তার বিরুদ্ধে ফাঁসির দ-াদেশের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন কি না এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
শনিবার সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট দেখা করেন তার সঙ্গে। তারা জামায়াত নেতা ও ফাঁসির দ-াদেশ প্রাপ্ত আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় দুই ঘন্টা এ দুই ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সঙ্গে কারাগারে আলোচনা শেষে বের হয়ে আসার পর জানা যায় রাষ্ট্রপতির কাছে এদুজনই ফাঁসির দ-াদেশ মওকুফের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণভিক্ষা চাইবেন না। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও প্রাণভিক্ষা চাওয়া হবে না। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ইচ্ছানুযায়ী, এ বিচার নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর পরিবার তুলে ধরবেন।
শনিবার দুপুরে গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তবে, গয়েশ্বরের ওই বক্তব্যের পরই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী বলেছেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর আইনজীবীদের দেখা করতে না দেওয়া পর্যন্ত বলতে পারছেন না, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না। প্রাণভিক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আইনজীবীদের দেখা করার পরই বিষয়টি জানা যাবে।
তিনি অভিযোগ করেন, সকালে আইনজীবীরা কারাগারে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ সময় তাঁর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, তাঁদের আইনজীবীদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দুজন ম্যাজিস্ট্রেটকে কারাগারের ভেতরে পাঠানো হয়েছে। এ দুজন ম্যাজিস্ট্রেট তাঁদের সঠিক তথ্য দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ব্যারিষ্টার ফারহাত কাদের চৌধুরী জানান, ক্ষমা চাইবেন কি না তা একমাত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বা তার আইনজীবীর কাছ থেকেই জানা যাবে।
এদিকে দুপুর আড়াইটায় ধানমন্ডিতে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাসভবনের সামনে তার ছোট ছেলে হুম্মান কাদের চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারি নজরুল ইসলাম বাবু সাংবাদিকদের বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মারসি পিটিশন চাইবার প্রশ্নই আসে না। মামলার বিষয় তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন। এখনো আইনজীবীরা সালাউদ্দিন কদের চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার জন্য কারাগারের সন্নিকটে বসে আছেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মূলত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার দেখা করতে চাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি এ মামলার ব্যাপারে অবহিত আছেন কি না তা জানতে।
এদিকে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না ই জাহান আরেক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদকে সাংবিধানিক অভিভাবক মনে করেন আমার স্বামী। তার কাছেই সুবিচারই পাওয়া যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
শনিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় মুজাহিদের স্ত্রী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় যদি অন্য কোনো মামলায় মুজাহিদের দ- কার্যকর হয় তাহলে তা নাগরিক অধিকারের লঙ্ঘন হবে বলে যুক্তি দেখান।
তিনি বলেন, যেহেতু রাষ্ট্রপতি ব্যক্তিগত জীবনে একজন আইনজীবী ও আইনবিদ তাই আশা করি রাষ্ট্রপতি নাগরিক হিসেবে মুজাহিদের আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন।
২১শে আগস্ট ও গ্রেনেড হামলা মামলার মুজাহিদ অন্যতম আসামি। ওই মামলার এখন চূড়ান্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। এই কারণেই মুজাহিদ রাষ্ট্রপতির কাছে জানতে চাইবেন যে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় তার অবস্থান কী হবে, বলেন তামান্না ই জাহান।
আপনার মতামত লিখুন :